সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ নামক লঞ্চের ইঞ্জিন থেকে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯-এ দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছে কমপক্ষে শতাধিক মানুষ। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অন্তত ৭০ জন ভর্তি হয়েছেন।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে মৃতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সঙ্গে কাজ করছে পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা ও ঝালকাঠির কোস্টগার্ড সদস্যরা।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন জানায়, ঘন কুয়াশার কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
আজ শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) ভোররাত ৩টার দিকে লঞ্চটিতে আগুন লাগে বলে যাত্রীরা জানিয়েছেন। ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের গাবখান চ্যানেলে এলে লঞ্চ থেকে কিছু যাত্রী নামতে পেরেছেন।
এর আগে ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক কামাল উদ্দিন ভুইয়া জানান, এ পর্যন্ত ৩০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে শতাধিক জন যাত্রী। ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বলেন, লঞ্চে পাঁচ শতাধিক যাত্রী থাকলেও আগুনে শতাধিক জন দগ্ধ হয়েছেন। দগ্ধ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এর সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান ওই ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা।
যাত্রীরা জানিয়েছেন, অনেকেই লঞ্চ থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। যাত্রীদের ধারণা হতাহতের সংখ্যা অনেক। তবে কেউ এখনো নির্দিষ্ট করে কোনো তথ্য দিতে পারেনি।
লঞ্চের যাত্রী সাইদুর রহমান জানান, তিনি ঢাকা থেকে বরগুনা ফিরছিলেন। ঝালকাঠি লঞ্চ টার্মিনালের ঠিক আগে গাবখান সেতুর কিছু আগে লঞ্চের ইঞ্জিনরুমে আগুন লেগে যায়। এরপর সেই আগুন পর্যায়ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে পুরো লঞ্চে। রাত ৩টা থেকে আগুন জ্বলতে থাকে। যাত্রীরা অনেকেই নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁতরে তীরে উঠতে পেরেছেন। অনেকে হয়তো পারেননি। লঞ্চে শিশু, বুড়ো, নারীসহ কমপক্ষে ৫ শতাধিক যাত্রী ছিল।
বিদেশফেরত এই যাত্রী বলেন, পোড়া গন্ধ পেয়ে আমি ভিআইপি কেবিন থেকে বেরিয়ে এসে দেখি লঞ্চে আগুন লেগেছে। তখন আমার স্ত্রী, শ্যালক নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নদী সাঁতরে তীরে উঠেছি। লঞ্চ ভাসতে ভাসতে কোথাও গিয়ে থেমেছে। তবে এটুকু বলছি, লঞ্চের কোনো অংশ পোড়ার বাকি নেই।
আগুনে পোড়া লঞ্চটিকে ভেসে যেতে দেখেছেন লঞ্চ থেকে নামতে পারা যাত্রীরা। এ রিপোর্ট লেখার সময় ভেসে যাওয়া লঞ্চের সর্বশেষ অবস্থা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। আগুনে যারা দগ্ধ হয়েছেন, তাদের অধিকাংশকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।